খুলশীতে গণমাধ্যমকর্মী বেবীর পরিবারের ওপর হামলা ও অপহরণ নাটক

পুলিশের তৎপরতায় মুক্তি পেলেন মা, বোন ও ভাবী, কুমিল্লা থেকে ফিরে এলেন পালিয়ে যাওয়া গৃহবধূ

📌 স্টাফ রিপোর্টার: সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন টাইগার পাস রেলওয়ে কলোনীতে গণমাধ্যমকর্মী মর্জিনা আক্তার বেবীর পরিবারের ওপর হামলা ও জিম্মি করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তার মা, কলেজছাত্রী বোন ও ভাবীকে জোরপূর্বক বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পুলিশি তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত তারা মুক্তি পান।

ঘটনা বিস্তারিত

গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইসমাইল (৩০) নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২৫–৩০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি বেবীর বাসায় প্রবেশ করে। তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং তার মা জান্নাত আরা বেগম (৪৬), বোন রোমানা আক্তার বিউটি (১৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী বিলকিস আক্তার (২৫)-কে টেনে-হিঁচড়ে বাসা থেকে বের করে মতিঝর্ণা এলাকায় নিয়ে যায়।

এর আগে একই দিন সকাল ১১টার দিকে ওই ইসমাইল বাসায় এসে দাবি করেন, তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার (২৪)-এর সঙ্গে বেবীর প্রবাসী ভাই মোঃ মিরাজ (২৩)-এর সম্পর্ক রয়েছে। তিনি এ সম্পর্ক বন্ধ না করলে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়ে চলে যান।

পুলিশের হস্তক্ষেপ

অভিযোগের ভিত্তিতে খুলশী থানার পুলিশ তাৎক্ষণিক তৎপরতা চালায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে বেবীর মা, বোন ও ভাবীকে তাদের জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। অন্যদিকে, পালিয়ে যাওয়া ইসমাইলের স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে একদিন পর কুমিল্লা থেকে ফিরে আসতে বাধ্য করা হয়।

গণমাধ্যমকর্মীর অভিযোগ

অভিযোগকারী মর্জিনা আক্তার বেবী বলেন—

“আমার পরিবারকে অন্যায়ভাবে টার্গেট করে জিম্মি করা হয়েছিল। অথচ সত্য হলো তাদের মেয়েই পালিয়ে গিয়েছিল। আমাদের পরিবারকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হয়রানি করাটাই মূল অপরাধ। আমি চাই দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ফারজানা আক্তার অতীতেও একাধিক পরিবারকে একইভাবে হয়রানির শিকার করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান

খুলশী থানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান—

“বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।”

এলাকায় প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনায় টাইগার পাস ও মতিঝর্ণা এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, একজন গৃহবধূর পালিয়ে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরপরাধ পরিবারকে জিম্মি করা একটি ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত, যা সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *