১. তিনদিন ধরেই চলা বিমান-মিসাইল যুদ্ধ
ইসরাইল গত ১৩ জুন থেকে “অপারেশন রাইজিং লায়ন” নামে ব্যাপক আকাশ-ভিত্তিক আক্রমণ চালিয়েছে; এতে অন্তত ১০০+ ইরানি সামরিক ও নিউক্লিয়ার সংযোজনাসহ অবকাঠামো ধ্বংস হয়। প্রথম দিনে ইরানের শীর্ষ কয়েকজন সেনা কমান্ডার, জেনারেল হিসেবেই পরিচিত হোসেইন সালামি, মোহাম্মাদ বাঘেরি ও অন্যান্য নিহত হয় । একই সময় মোসাদ প্রাক্তন ড্রোন অবলম্বন করে ইরানের ভেতরে আক্রমণ চালায়, যা হিমবাহ-প্রমাণ প্রতিরক্ষা ব্যারাক এসব ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে ।
২. ইরানের প্রতিশোধ ও হতাহতের হিসাব
১৩–১৪ জুন রাতের মধ্যে ইরান প্রায় ১৫০+ ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ১০০+ ড্রোন একযোগে ছোঁড়ে, যার নাম দেওয়া হয় “অপারেশন ট্রু প্রমিস III” । ইসরায়েলে মারা যায় অন্তত ১০ জন, প্রায় ২০০ জন আহত। ফিলিস্তিন, ইয়েমেন (হৌথি) ও অন্যান্য শরিক দেশেরও মিসাইল এই হামলার অংশ ছিল ।
৩. তৃতীয় দিনে ফের মেজর উত্তেজনা
১৫ জুন তৃতীয় রাতে ইসরাইল আবার বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানী তেল ও গ্যাস প্ল্যান্ট, ফার্দা ইনডাস্ট্রি ও আবাসিক ভবনে ফায়ার ও বিস্ফোরণ ঘটায়, যার মধ্যে দাউদ্রূপে ইরানের ‘সাউথ পার্স’ গ্যাস অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয় । একই সময়ে ইরান ফের ব্যালিস্টিক মিসাইল চালায় – তিনজন শিশু-সহ ৬ জন নিহত, ২০০+ আহত বিস্তারিত রিহোভোট, বাত ইয়াম, তেল আবিব ও যেরুজালেমে ।
৪. প্রাণহানি ও আর্থিক ক্ষতি
ইরানের উপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০৬ জন নিহত ও ৬৫৪ জন আহত, এমনটি জানিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপ; ইরানে সরকারিভাবে সংখ্যা প্রকাশ না করলেও খবর প্রচারিত হচ্ছে । এছাড়া, গ্যাস ও তেলের সরবরাহ প্রভাবিত হওয়ায় বিশ্ববাজারে সূর্যাস্ত হয়েছে দাম – পার-বারেল দাম বেড়েছে প্রায় ৭–১১% ।
৫. কূটনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব
– ইরান–যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা স্থগিত। ইরান IAEA‑এর সহযোগিতা স্থগিত ঘোষণা করেছে ।
– রাশিয়া শান্তি উদ্যোগে ভূমিকা নিতে চায় এবং ইরান ও ইসরাইলের প্রতি নিজ অবস্থান রক্ষা করছে ।
– সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “শিগগিরই শান্তি হবে”, আমেরিকা ও ইসরায়েলের মধ্যে দেখতে পাওয়া এসব বৈঠকি প্রচেষ্টার প্রতিফলন ।
৬. সামনের পথে কী অপেক্ষা করছে?
– উত্তেজনার মাত্রা বাড়লে মধ্যপ্রাচ্যের আরও বেশি দেশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা।
– ইরানের পরবর্তী প্রতিরোধে হতে পারে হুথি বাহিনীর আরও অন্তর্ভুক্তি।
– আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দর ওঠানামা অব্যাহত থাকবে, আর অর্থনীতিতে প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
– কূটনীতি, প্যারামিলিটার সমঝোতা ও বাইরের শক্তির ভূমিকা নিয়েও বিশ্ব নজর রেখেছে।
✍️ উপসংহার
বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সুনির্দিষ্ট বিমান-ড্রোন হামলা ও ইরানের প্রতিক্রিয়ার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে একটি সরাসরি এবং ধারাবাহিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি কূটনৈতিক বন্ধনও নড়বড়ে। পরিস্থিতির অবস্থা অনুসারে এই সংঘর্ষ প্রান্তিক থেকে ডিজিটাল বা প্রযুক্তিগত কৌশলেও সংকট আনে। বিশ্ব-রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এখন রাশিয়ার মধ্যস্থতাকারী ভূমিকাও নজরে রাখছেন।